Image description

ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে এসে বিপাকে ছাত্রলীগ নেতা আলীম
 
ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৭ পিএম
 
 

  
আরও পড়ুন
গণরুম বিলুপ্ত করে ইতিহাস সৃষ্টি করল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
পিএইচডি জালিয়াতি করে অধ্যাপক হন ইউজিসির সাবেক সদস্য বিশ্বজিৎ
ঢাবিতে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের গায়েবানা জানাজা
শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা
চোখের আলো নিভে গেলেও অন্তরের আলোয় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখেন তারা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে পড়েছেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা।  শনিবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগণ হরকরা গ্যালারি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 


 
পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করেন। তোপের মুখে পড়া ওই ছাত্রলীগ নেতা বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল আলীম। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক। 

জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন আলীম। তার ক্যাম্পাসে আসার খোঁজ পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। পরে তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে থানায় সোপর্দ করা হয়। এ সময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অতর্কিত চড়-থাপ্পড়ের শিকার হন তিনি। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আলীম শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। তারই ছত্রছায়ায় তিনি হলে সিট বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের মারধর, মাদকাসক্তি, নারী উত্ত্যক্তকারী ও কোটা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি দিত। এছাড়া তার ছত্রছায়ায় ক্যাম্পাসে কিছু ‘গ্যাং’ গড়ে উঠেছিল। 

 এছাড়া শহিদ জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আলীম হলে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের জোর করে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে নিয়ে যেত। হলের বেশিরভাগই কক্ষ তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। জিয়া হলে এমন কোনো রুম নেই, যে রুমে আলীমের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।

ভুক্তভোগী আব্দুল আলীম বলেন, ভেবেছিলাম দেরিতে এসে পরীক্ষায় এটেন্ড করে পাশ মার্ক তুলে আগে আগে বের হয়ে যাবে; কিন্তু বুঝতে পারিনি বিষয়টা এতদূর গড়াবে। এ সময় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এসবের সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নাই। 

বিভাগের শিক্ষকরা জানান, আমরা জানতামই না এমন কেউ পরীক্ষা দিতে এসেছে। পরীক্ষা চলাকালে বাইরে হট্টগোল দেখে সেখানে গিয়ে তার কথা জানতে পারি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা ও সমন্বয়কদের হাতে  তুলে দেওয়া হয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, শিক্ষকদের সমন্বয়ে আমরা তাকে প্রটেকশন দিয়ে সেখানে থেকে নিয়ে এসে থানায় সোপর্দ করি। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আর যারা এসব দোসরদের প্রশ্রয় দিবে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করি। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইবি থানার এসআই মেহেদী হাসান বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মব জাস্টিস থেকে তাকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। এখন আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।