Image description

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
আরটিএনএন: অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের এই উপত্যকার ওপর দখলদারিত্ব এবং নিপীড়ন চাপিয়ে দিয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।  আল জাজিরা বলছে, নিহতের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার শিশু। টানা ১১ মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধ একুশ শতকের অন্যতম প্রাণঘাতি যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।

এরমধ্যেই হিজবুল্লাহ কমান্ডার এবং হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গত এক বছরে কিছু অভিযান পরিচালনা করেছে ইসরাইল। এই প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য সে সব হত্যাকাণ্ড তুলে ধরা হল।

ফুয়াদ শুকর (হিজবুল্লাহ)
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গত জুলাইয়ের শেষ দিকে লেবাননে বিমানহামলা চালিয়ে হত্যা করে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে। ইসরাইল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে প্রাণঘাতি হামলার জন্য ফুয়াদকে দায় করেছিল ইসরাইল।  ওই হামলায় ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী ১২ জন ইসরাইলি শিশু ও কিশোর নিহত হয়। যদিও গোলান মালভূমির হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার দায় অস্বীকার করেছিল হিজবুল্লাহ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে শুকরের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একইসঙ্গে ১৯৮৩ সালে বৈরুতে মার্কিন মেরিন ব্যারাকে বোমা হামলায় অভিযুক্ত করেছিল। ওই হামলায় ২৪১ মার্কিন সামরিক সদস্যের মৃত্যু হয়।

আল নাসের (হিজবুল্লাহ)
জুলাইয়ের শুরুতে হিজবুল্লাহর তৃতীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মুহাম্মদ নিমাহ নাসেরকে হত্যা করে ইসরাইল।  যিনি হজ আবু নামেহ নামেও পরিচিত। নাসেরের মৃত্যু কোথায় হয়েছে তা সম্পর্কে হিজবুল্লাহ বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছিল, নাসের হিজবুল্লাহর আজিজ ইউনিটের কমান্ডার ছিলেন। তাদের দাবি, ইসরাইলি ভূখণ্ডে দক্ষিণ-পশ্চিম লেবানন থেকে হামলা চালানোর পেছনে এই ইউনিটই দায়ী।

তালেব আবদুল্লাহ (হিজবুল্লাহ)
জুনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া আরেক শীর্ষ কমান্ডার তালেব আবদুল্লাহ।  ইসরাইলের সাথে লেবাননের সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে নিহত কমান্ডারদের মধ্যে আবদুল্লাহ ছিলেন হিজবুল্লাহর সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। 

মোহাম্মদ দেইফ (হামাস)
১ আগস্ট, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে হত্যার দাবি করে ইসরাইল। দেশটির সেনাবাহিনী জানায়, গত ১৩ জুলাই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকায় বিমান হামলায় দেইফ নিহত হন। ইরানের রাজধানী তেহরানে এক হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার খবর জানার এক দিন পর সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার খবর জানা যায়।

গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অসংখ্য টানেল বা সুড়ঙ্গ রয়েছে। এ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন দেইফ। এ ছাড়া তিনি হামাসের বোমা বানানোর প্রকল্পে ভূমিকা রেখেছেন। তবে সচরাচর প্রকাশ্যে আসতেন না দেইফ।

ইসমাইল হানিয়া (হামাস)
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া। তেহরানের অভিজাত অতিথি ভবনে গুপ্ত হামলা চালিয়ে গত ৩১ জুলাই তেহরানে হানিয়া ও তার এক দেহরক্ষীকে হত্যা করে ইসরাইল। 

সালেহ আল–আরোরি (হামাস)
চলতি বছরের শুরুতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরাইলের ড্রোন হামলায় হামাসের উপপ্রধান সালেহ আল–আরোরি নিহত হন।  তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান ছিলেন।  ১৯৬৬ সালে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় জন্ম নেওয়া আল-আরোরির দীর্ঘ ১৫ বছর কাটে ইসরাইলের কারাগারে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লেবাননে নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন। গাজা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি হামাসের মুখপাত্র হিসেবে সামনে আসেন।