Image description

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরটিএনএন
ঢাকা: বীমা খাতে প্রতারণা বা মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। তিনি বলেন, বীমা খাত এমন একটি খাত যেখানে মানুষের আস্থা প্রয়োজন।

আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) আইডিআরএ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন নিয়ে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে তিনি বীমা কোম্পানিগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যারা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে তাদের আগে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে হবে। এই ঝুঁকিমুক্ত থাকার জন্যই করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন জারি করা হয়েছে।

অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে বীমা কোম্পানি পৃথক ও উন্নত উল্লেখ করে শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, দু’একটি কোম্পানির কারণেও এই অবস্থান নষ্ট হতে পারে। বীমা খাতের অবস্থানকে ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।

শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, একাউন্টিংয়ের পরিভাষায় বীমা হলো- অন গোয়িং কনসার্ন; এটি চলবেই। আর যদি চলতেই হয় তাহলে তাকে চলার আদলেই থাকতে হবে। যদি কেউ এখানে আসেন তাকে থাকতে হবে। আর যদি কেউ ব্যবসা গুটাতে চায় তাহলে তাদের এখানে না আসা উচিত।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এই সচিব বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়বে। একইসাথে বাড়বে ঝুঁকি। প্রয়োজন হবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাও। আর এ জন্য প্রয়োজন বীমার।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৮১টি কোম্পানি আছে, আরো বীমা কোম্পানি আসবে। এখানে ডিমান্ড (চাহিদা) আছে তাই সাপ্লাই (সরবরাহ) প্রয়োজন। তবে প্রতারণা বা মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ)’র প্রেসিডেন্ট ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী বি এম ইউসুফ আলী বলেণ,  বীমা কোম্পানির সিইওদের নেতৃত্বে কোন টাকা চুরি হয় না। বীমা খাতে দুর্নীতি-অনিয়মের জন্য সিইওরা দায়ী নয়। চাকরির নিরাপত্তা পেলে বীমা খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সিইওরা ভূমিকা রাখতে পারবে।

বিআইএফ’র প্রেসিডেন্ট বি এম ইউসুফ আলী বলেন, বীমা খাতে উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের জারি করা ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী। এটা বাস্তবায়ন হলে বীমা খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

তিনি বলেন, কোম্পানির এমডি বা সিইও বোর্ডের একজন কর্মচারী। একজন এমডি বা সিইও’র পক্ষে পরিচালনা পর্ষদের বাইরে গিয়ে কিছুই করার সুযোগ নেই বাংলাদেশের আইনের প্রেক্ষাপটে।

তিনি আরো বলেন, আমরা যারা ম্যানেজমেন্ট আছি, সব সময়ই চেষ্টা করি সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি-বিধান মেনে চলার।

বিএম ইউসুফ আলী বলেন, দেশের যে কয়টি বড় কোম্পানি ধ্বংস হয়ে গেছে সেগুলোর কাহিনী যদি আমরা দেখি তাহলে দেখা যায়, কারা এখানে দায়ী। এখানে সিইও’দের ভূমিকা কি ছিল। দেখা যায়, সিংহভাগ দায়-দায়িত্ব বোর্ডের। এখানে ম্যানেজমেন্টের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা শুধু পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা মেনেছে। সম্প্রতি অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য বীমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু বোর্ড ভেঙে দিলেই সমাধান হবে না, সমাধান হয়নি।

সিইও’দের চাকরির নিশ্চয়তা চেয়ে তিনি বলেন, যদি আমাদের টিকে থাকার মতো ব্যবস্থা করেন তাহলে কোন সিইও’র নেতৃত্বে বীমা কোম্পানির একটি টাকাও নষ্ট হবে না।