নিজস্ব প্রতিবেদক
আরাটএনএন: স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের একই মঞ্চে বসিয়ে কর্মসূচি পালন করায় বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন সরকার টিপুকে শোকজ করেছে বিএনপি।
এহেন দলীয় শৃঙ্খলা চরম লঙ্ঘনের দায়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে দলটি। সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে টিপুকে শোকজ করা হয়।
এতে বলা হয়, আলাউদ্দিন সরকার টিপু ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা হয়েও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নৈতিকতা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় একই মঞ্চে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বসিয়ে বক্তৃতা করিয়েছেন, যা স্থিরচিত্রসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। সুতরাং এহেন দলীয় শৃঙ্খলা চরম লঙ্ঘনের দায়ে কেন আপনার (আলাউদ্দিন সরকার টিপু) বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
চিহ্নিত সন্ত্রাসী জাকির-হান্নানের দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা তাদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। একই সঙ্গে তাদের আশ্রয় -প্রশ্রয় দেওয়া বিএনপি নেতাদেরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা। এরই মধ্যে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন সরকার টিপুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান স্থানীয়রা ।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অনেকে এখন বিএনপিতে ঢুকে পড়ছে। বিএনপির একশ্রেণির সুবিধাবাদী নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায়। দক্ষিণখান থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী জাকির ও হান্নান স্থানীয় বিএনপির আলোচনা সভায় বিএনপি নেতাদের পাশে বসে বক্তৃতা করায় দক্ষিণখান এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, দক্ষিণখান এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন জাকির (৪২) এবং আব্দুল হান্নান (৪৮) কুখ্যাত জমির দালাল ও জাল দলিলকারক হিসাবে পরিচিত। বিগত আওয়ামী দুঃশাসনের সময়ে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে রমরমা জমির দালালি ব্যবসা করে। এ চক্রের ফাঁদে আটকা পড়ে বহু লোক সর্বস্বান্ত হয়। দক্ষিণ খান, তিনশ’ফুট, পূর্বাচল এবং ভাটারা এলাকায় এরা ভূমিদস্যু হিসাবে পরিচিত।
এলাকাবাসী জানায়, জাকির-হান্নান মানিক জোড়। দক্ষিণখান কাওলা এলাকার বাসিন্দা। সব সময় একসঙ্গে ঘোরাফেরা করে। এরা অবৈধ অস্ত্রধারী। এছাড়া আওয়ামী লীগের স্থানীয় কমিশনার আনিসুর রহমান নাঈম এবং ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের ক্যাডার বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসাবে পরিচিত।
এদের অন্যতম কাজ সাধারণ মানুষের জমি দখল করা এবং বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের মধ্যে জাল-জালিয়াতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জমি বায়না করা। পরবর্তীতে ওই জমি বহুগুণ দামে কিনতে বাধ্য করা। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে মস্তানি করা এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বেআইনিভাবে জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়া। আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে এরা এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন।
এ চক্রের গডফাদার কমিশনার নাঈম এবং সাবেক এমপি হাবিব হাসান আত্মগোপনে থাকলেও গ্রেফতার এড়াতে জাকির-হান্নান এখন ভোল পাল্টে বিএনপিতে ঢুকে পড়েছে। এখন তারা বলার চেষ্টা করছেন আগে বিএনপি করতেন। অথচ এদের কারণে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের সময় বিএনপির বহু নেতাকর্মী রাতে বাসায় ঘুমাতে পারেনি। জাকির-হান্নানের দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা এদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।